
রংপুরের তিস্তা, মির্জাপুরের ঝিনাই ও বংশাই নদে তীব্র ভাঙন
বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি-ফসলি জমি
রংপুরের বিভিন্ন উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তায় প্রতিবছরই ভাঙনের কারণে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি ও ফসলি জমি। এদিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত ঝিনাই ও বংশাই নদে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে। ঘরবাড়ি হারিয়ে বিপুলসংখ্যক কৃষক ও নদীপারের পরিবারগুলো এখন দিশাহারা। অনেকেই অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন, বাস করছেন রাস্তাঘাট ও বাঁধে।
রংপুরে তিস্তার ভাঙনে দিশাহারা ১০ থেকে ১৫ হাজার পরিবার। প্রতিবার তিস্তার পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় ভেঙে যাচ্ছে বেড়িবাঁধসহ স্থাপনা। ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, ঘাটসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। শত শত হেক্টর ফসলি জমি ও রাস্তাঘাট ভেঙে যাচ্ছে নদীতে। এতে দিশাহারা চর এলাকার মানুষ। রংপুরের গঙ্গাচড়া, কাউনিয়া, পীরগাছায় দেখা দিয়েছে তিস্তার ভাঙন।
স্থানীয়রা জানায়, প্রতিবছর এই পানি বৃদ্ধি ও কমার সময় বেড়িবাঁধ ভেঙে যায়। এ কারণে ফসলি জমি বাড়িঘরসহ ভোগান্তি ও দুর্ভোগে পড়তে হয়। এ কারণে নিজের উদ্যোগে স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমেই বেড়িবাঁধ রক্ষার চেষ্টা চালাচ্ছে অনেকে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আহসান হাবিব জানান, তিস্তা অববাহিকার কিছু অংশে নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। পানি বৃদ্ধি ও কমার সময়গুলোতে ভাঙন দেখা দেয়।
তিনি জানান, রংপুর জেলার বিভিন্ন উপজেলায় নদীভাঙন রোধে স্থায়ী প্রকল্পের প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।
এদিকে টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে প্রতিবছর ঝিনাই নদে বানের পানি আসার সঙ্গে সঙ্গেই নদীঘেঁষা কয়েকটি গ্রামে ভাঙন শুরু হয়। এ বছরও এর ব্যতিক্রম নয়। ফতেপুর ইউনিয়নের ফতেপুর, বানকাটা, সুতানড়ী, থলপাড়া ও চাকলেশ্বর এলাকায় শুরু হয়েছে ব্যাপক ভাঙন। এর মধ্যে বানকাটা, সুতানড়ী, ফতেপুর, চাকলেশ্বর, বৈলানপুর-পাতিলাপাড়া ও থলপাড়া এবং ভাতগ্রাম ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামটিতে ভাঙন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে।
বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ফতেপুর, বানকাটা ও থলপাড়া এবং ভাতগ্রাম ইউনিয়নের গোড়াইল গ্রামের অর্ধশত পরিবারের বসতবাড়ি ঝিনাই নদের ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রতিবছর পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে কয়েক বছর ধরে নদের ওই সব এলাকা থেকে খননযন্ত্র দিয়ে বালু উত্তোলন করা হয়। এতে ভাঙনের তীব্রতা বাড়ে।
মির্জাপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাফিজুর রহমান বলেন, প্রতিবছর ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার সরকারি জমিতে বাড়ি বানানোর আবেদন করলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।