জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপে মহেশখালীতে প্যারাবন দখলমুক্ত

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসকের তড়িৎ হস্তক্ষেপে অবশেষে রক্ষা পেয়েছে মহেশখালীর বিশাল প্যারাবনটি। শত শত শ্রমিক দিয়ে সাবাড় করা হচ্ছিল সৃজিত প্যারাবন। সরকার কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে দ্বীপবাসীকে রক্ষার জন্য যে প্যারাবন সৃষ্টি করে যাচ্ছিল সেই প্যারাবনের ওপরই হামলে পড়েছিল দ্বীপের মানুষরূপী কতিপয় ‘চিংড়ির টাকা পাগল’ প্রভাবশালী ব্যক্তি। করোনা প্রতিরোধে সরকারের দেওয়া টানা লকডাউনের সময় প্রশাসনের ব্যস্ততার সুযোগ নিয়েই এসব ব্যক্তি দ্বীপের প্যারাবন কেটে ঘের করার কাজটি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছিলেন।

বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে শত শত প্যারাবন কেটে গড়ে তোলা চিংড়ি ঘেরের টাকা উপার্জনকারীদেরই কিছু ব্যক্তি প্যারাবন কেটে নতুন করে বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ঘের করার কাজে বিনিয়োগ করছিলেন। দ্বীপের বিএনপির অঙ্গ সংগটন স্বেচ্ছাসেবক দলের একজন নেতা অগ্রণী ভূমিকায় রয়েছেন এহেন ক্ষতিকর কাজে। বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের কিছু ব্যক্তির সঙ্গে হাত মিলিয়েই দিবারাত্রি সাগর তীরবর্তী বড়দিয়া নামক এলাকায় করা হচ্ছিল এমসন চিংড়ি ঘের। জোট সরকারের আমলে এলাকাটিতে প্যারাবন কেটে গড়ে তোলা এরকম আরো শত শত একরের চিংড়ি ঘের তাদের আরো সেখানে রয়েছে।

কক্সবাজারের মহেশখালী দ্বীপের ঘটিভাঙ্গা মৌজার সাগর তীরবর্তী বড়দিয়া নামের বিশাল প্যারাবন কেটে বাঁধ দিয়ে করা কয়েক শ একরের চিংড়ি ঘের শনিবার দখলমুক্ত করা হয়েছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ কালের কণ্ঠকে জানান- ‘লকডাউনের সুযোগে দ্বীপের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি শ্রমিক দিয়ে বনবিভাগের সৃজিত প্যারাবন কেটে চিংড়ি ঘের করছিলেন। আমি এ খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে তড়িৎ দ্বীপ রক্ষায় ব্যবস্থা নিতে বলি।’

মহেশখালীর গোরকঘাটা উপকূলীয় বন বিভাগের বন রেঞ্জ কর্মকর্তা আনিসুর রহমান জানান-প্যারাবন কেটে চিংড়ি ঘের যারা করছিলেন তারা বেশ প্রভাবশালী লোক। এসব লোকজনের হাতে বনকর্মীদেরও থাকতে হয় অসহায় অবস্থায়। তাই মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সহযোগিতায় বনকর্মী ও বিপুলসংখ্যক শ্রমিক নিয়ে প্যারাবন কেটে চিংড়ি ঘেরের জন্য নির্মিত বাঁধ ভেঙে দেওয়া হয়েছে। সেই সঙ্গে প্যারাবন রক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে সোনাদিয়া দ্বীপ সহ ঘটিভাঙ্গা সাগর দ্বীপের সহস্রাধিক একর প্যারাবন কেটে যেসব প্রভাবশালী ব্যক্তিরা চিংড়ি ঘের করেছিলেন। অভিযোগ উঠেছে, একই ব্যক্তিরাই বর্তমান ক্ষমতাসীন দলের লোকজনদের হাত করে একই কায়দায় প্যারাবন কেটে দ্বীপটিকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিচ্ছিলেন।

গ্রীন নিউজ রিপোর্ট।

Sharing is caring!

Related Articles

Back to top button