
৩ শতাংশ বাস্তুসংস্থান রয়েছে পূর্বের ন্যায়, চলছে গণবিলুপ্তির ষষ্ঠ পর্যায়
মিজানুর রহীম চৌধুরী
ইউরোপ আমেরিকা কেনিয়া মেক্সিকোর মত দশটিরও বেশি দেশের বৈজ্ঞানিকরা একসাথে সম্প্রতি একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন, এতে তারা দাবি করেন, প্রাণী এবং উদ্ভিদ এর সুস্থ বাসস্থানের জন্য পৃথিবীর স্থলভাগের মাত্র ৩% বাস্তু তন্ত্র এখনো আগের মত আছে, এবং একে রক্ষা করেছে “শিকারি”,”অশিক্ষিত”, “পশ্চাদপদ” আদিবাসীরা
অ্যামাজন এবং কঙ্গোর জঙ্গল, সাইবেরিয়া এবং কানাডার কিছু কিছু জঙ্গল এবং সাহারা মরুভূমি হল সেই সমস্ত অঞ্চল এর উদাহরণ যেখানে এখন অব্দি মানুষের কর্মকাণ্ডের জন্য প্রকৃতির ধ্বংসলীলা শুরু হয়নি। এই অঞ্চল গুলি মিলিয়ে মাত্র ৩ শতাংশ অঞ্চল বাকি যা এখনো আগের মতই আছে। সারা পৃথিবীব্যাপী এই এই খণ্ড-খণ্ড কিছু অংশে মানুষের কর্মকান্ড প্রকৃতির উপর এবং প্রকৃতিতে বসবাসকারী বিভিন্ন জীবের উপর প্রভাব ফেলেনি।
সম্প্রতি করা গবেষণাতে বৈজ্ঞানিকরা বিভিন্ন বাস্তু তন্ত্রের পূর্ববর্তী সময়ের তুলনায় বর্তমানে কতটা জীবের বাসস্থান অক্ষুন্ন আছে এবং কতগুলি জীব বিলুপ্ত হয়েছে সেই তথ্য সংগ্রহ করেছেন। সেইখানে দেখা যাচ্ছে, মাত্র ৩ শতাংশ জায়গা ১৫০০ সালের তুলনায় অক্ষত আছে এবং তাকে অক্ষুন্ন রেখেছে আদিবাসীরা।
বিজ্ঞানীদের গবেষণা অনুযায়ী ইতিপূর্বে পাঁচবার প্রাণী এবং উদ্ভিদ এর গণবিলুপ্তি বা মাস এক্সটিংশন ঘটেছে।
পৃথিবীতে নানা রকম দুর্যোগ (যেমন আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত বা উল্কাপাত) এর কারণে এ ধরনের গণবিলুপ্তি ঘটেছে। এই ধরনের গণবিলুপ্তির কারণে কখনো কখনো ৯০% কাছাকাছি সমস্ত জীবন ধ্বংস হয়ে গেছে, আবার সময়ের ব্যবধানে নানা বিবর্তনের মধ্য দিয়ে নতুন জীবনের সৃষ্টি হয়েছে পৃথিবীতে পরিপূর্ণ করেছ।
বিজ্ঞানীরা বলছেন -বর্তমানে ষষ্ঠ গণবিলুপ্তিকরন এর প্রক্রিয়া চলছে মানুষের কর্মকাণ্ডের জন্য । আগের পাঁচটি গণবিলুপ্তিকরনের হারের তুলনায় বর্তমানে যে হারে প্রতিদিন কোন না কোন প্রাণী বা জীবের বিলুপ্তি ঘটছে তা অনেকটাই বেশি।
এই বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানে বিজ্ঞানীরা অক্ষত বাসস্থানের সন্ধান করেছেন যেখানে তারা দেখেছেন যে বাইরে থেকে মানুষের দ্বারা আগত কোন জীব সেখানে স্থানীয় প্রজাতির সাধারণ সংখ্যা এবং বাসস্থানকে কতটা প্রভাবিত করছে। শুধুমাত্র বড় স্তন্যপায়ী প্রাণীই নয়, তাদের এই অনুসন্ধান মাছ, গাছ, পাখি এমনকি পতঙ্গ শ্রেণীর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র জীবকেও ধরে করা হয়েছে।
মিজানুর রহীম চৌধুরী