
দখলের কালো থাবা পড়েছে বুড়িগঙ্গার বুকে: সবুজ মহাজন’
দখলের কালো থাবাও পড়েছে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলের বুকে। ঢাকা জেলা প্রশাসন পরিচালিত এক জরিপে দেখা গিয়েছে ২৪৪ জন অবৈধ দখলদার দখল করেছে বুড়িগঙ্গার ৫০ একর জমি। মসজিদ মাদ্রাসা করে একধরণের কৌশল অবলম্বন করে এই দখলের রাজত্ব দিনদিন বাড়ছে। নদীটির দুইপাড়ে মসজিদ এবং মাদ্রাসা রয়েছে। ছোট ছোট পদক্ষেপে এই দখল বানিজ্য চলে।
হালকা নড়বড়ে ঘর দিয়ে প্রথমে নদী দখলের চেষ্টা করা হয় পরে সেখানেই গড়ে উঠে বড় বড় দালান। একটি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বুড়িগঙ্গা আদি চ্যানেলকে নগ্নভাবে দখল করে শুধু হাসপাতাল ভবন নয় গড়ে তুলেছে হাউজিং ব্যবসাও। প্রশাসন সব দেখে কিন্তু প্রভাবশালীদের বিপক্ষে কিছুই করতে পারে না।
বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলে একসময় বড় বড় স্টিমার, লঞ্চ চলাচল করত। এখন তা পরিণত হয়েছে ময়লার ভাগাড়ে। ময়লা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে নদীর দুই পাশ। এরই মধ্যে লোহারপুল অংশে বন্ধ হয়ে গেছে নদীর মুখ। শুধু আদি বুড়িগঙ্গাই নয়, নদীটির মূল চ্যানেল ও তুরাগের দুই পাড়ের সাড়ে তিনশর বেশি জায়গায় ময়লা ফেলে ভরাট করা হচ্ছে নদী। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেশের নদ-নদী উদ্ধারে একদিকে চলছে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযান, অন্যদিকে বর্জ্য ফেলে চলছে নদী ভরাটের মহা-আয়োজন।
সরেজমিন বুড়িগঙ্গা ঘুরে দেখা গেছে বর্জ্য ফেলে নদী হত্যার মহা-আয়োজন। কামরাঙ্গীরচরের দুই পাশ দিয়ে বয়ে গেছে বুড়িগঙ্গার দুটি প্রবাহ। মূল নদী থেকে লোহারপুলের দিকে বুড়িগঙ্গার আদি চ্যানেলে ঢুকতেই নাকে এসে লাগে পচা পানির উৎকট গন্ধ। নীলচে পানির রং বদলে হয়ে গেছে কালো। কামরাঙ্গীরচরের উল্টো পাশে ইসলামবাগের একই স্থানে অন্তত আধা কিলোমিটার নদীর সীমানাজুড়ে বর্জ্য ফেলে ভরাট করা হয়েছে নদী। ময়লা ফেলে ভরাটকৃত জায়গায় বসানো হয়েছে ভাঙাড়ির দোকানপাট। বিপরীত দিকে কামরাঙ্গীরচর অংশেও একই অবস্থা। ফলে সরু হয়ে গেছে চ্যানেল। চ্যানেলটির মুখ থেকে লোহারপুল পর্যন্ত নদীর দুই পাশেই কিছুদূর পর পর এমন ময়লার ভাগাড়। লোহারপুলে গিয়ে বন্ধ হয়ে গেছে নদী। আর এসব আবর্জনা নদীতে পড়ে বিষাক্ত করে ফেলেছে নদীর পানি। পানির রং হয়েছে আলকাতরার মতো কালো। দূষিত হয়ে পড়েছে দুই পাড়ে বসবাসের পরিবেশও। বুড়িগঙ্গা’র দখলদার উচ্ছেদ করে সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে। তা না হলে বুড়িগঙ্গা স্থায়ীভাবে তার স্ট্রাকচার হারাবে। নদী ড্রেনে পরিণত হবে।
সবুজ মহাজন
নোঙর বাংলাদেশ