হালদা নদীতে দ্বিতীয়বারের মতো ডিম ছাড়ল মা মাছ

দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র মৎস্য প্রজননক্ষেত্র হালদা নদীতে দ্বিতীয়বারের মতো ডিম দিয়েছে মা মাছ। শুক্রবার দিবাগত রাত১২টার দিকে সীমিত পরিসরে ডিম ছাড়ে। রাউজানহাটহাজারী উপজেলার দুই পাড়ের কিছু ডিম সংগ্রহকারী ডিম পেয়েছেন। তবেডিম পাওয়ার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন।

দুই উপজেলার বাসিন্দাসহ সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার বিকেল থেকে নমুনা দেয়। এরপর ভাটার সময়রাত ১২টার দিকে নদীর রাউজান অংকুরিঘোনা থেকে রামদাস মুন্সিরহাট পর্যন্ত কয়েক কিলোমিটারজুড়ে ডিম ছাড়ে রুই, কাতলা, মৃগেল, কালবাউশ জাতীয় মা মাছ। গভীর রাত হওয়ায় ডিম সংগ্রকারীর সংখ্যা কম ছিল নদীতে। ডিম ছাড়ার স্থায়িত্বও ছিলস্বাভাবিকের ছেয়ে কম। 

রাউজান উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা পীযুষ প্রভাকর শনিবার সকালে বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬টার দিকে নমুনা দেওয়ায়সংগ্রহকারীরা ডিম ধরতে নদীতে নেমেছিল। কিন্তু তখন ডিম না পাওয়ায় তারা নদী থেকে উঠে যান। তবে গভীর রাতে মা ডিমছাড়লেও অনেকে তা জানে না। জন্য নদীতে মৎস্যজীবীর সংখ্যা ছিল কম।

হালদা বিশেষজ্ঞ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক . মনজুরুল কিবরিয়া রাতভর নদীতে অবস্থানকরছিলেন। তিনি আজ সকালে জানান, দ্বিতীয়বারের মতো হালদার মা মাছ ডিম দিয়েছে। তবে এর পরিমাণ কত তা হিসেবকরতে জানাতে সময় লাগবে।

প্রসঙ্গত, গত মাসে নদীর মা মাছ ডিম ছাড়ে। তখন ডিম পাওয়ার পরিমাণ ছিল বিগত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ রেকর্ড।উল্লেখ্য যে, হালদা নদীতে প্রতিবছর চৈত্র, বৈশাখ, জৈষ্ঠ্য মাসের কোনে একসময় প্রাকৃতিক বৈরী পরিস্থিতি যেমন ঝড়বজ্রবৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল সৃষ্টি হলে মা মাছ ডিম দেয়। নদীর দুই পাড়ের শত শত ডিম সংগ্রহকারী ডিম সংগ্রহ করে হ্যাচারি এবং নিজস্বকুয়ায় (মাটির গর্ত) বিশেষ পদ্ধতিতে রেণু ফুটিয়ে মৎস্যজীবীদের কাছে চড়া দামে বিক্রি করে। প্রাকৃতিক পরিবেশে ডিম থেকেপাওয়া বলে হালদার রেণুর চাহিদা রয়েছে সারা দেশে। কারণে প্রতিবছর হাজার হাজার মৎস্যজীবী রেণু পেতে উন্মুখ থাকে।প্রতিবছর বিভিন্ন জেলা থেকে মৎস্যজীবীরা এসে রেণু সংগ্রহ করেন রাউজানহাটহাজারীর সংগ্রহারীদের কাছ থেকে। ডিমসংগ্রহের ওপরই হালদা পাড়ের অনেক পরিবারের সারা বছরের আয়রোজগার। 

Sharing is caring!

Related Articles

Back to top button