কিছু ফল-ফলাদি পাখ পাখলি ও বন্যপ্রাণীর জন্য সংরক্ষণ করি

ফাইজ তাইয়েব আহমেদ: আমাদের বন্ধুদের অনেকেই ফল বাগান করেন, ছাদ কৃষি করে থাকেন। অনেকেরই বাণিজ্যিক ফল বাগান আছে। প্রায়ই দেখি ফলগুলো কার্বন ব্যাগের ভিতরে পুরে রাখা হয়। অর্থনৈতিক দিক থেকে এটা বেশ উপকারী। তবে এই ক্ষেত্রে প্রাণ-প্রকৃতির দিকে খেয়াল রাখা চাই। অন্তত ১০% ফলে যাতে আমরা কার্বণ ব্যাগ না লাগাই।

কার্বণ ব্যাগ খরুচে বলে বাংলাদেশে অনেকেই পুরো আম জাম লিচু পেপে পেয়ারা গাছ জাল দিয়ে ঢেকে দেন, এটা খুবই ভয়ংকর একটা চর্চা। প্রায়ই দেখা যায় বিলুপ্তপ্রায় পাখি রাতে এই জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। এভাবে পাখি ও বন্যপ্রাণী মেরে আমরা ক্ষতিকর পতঙ্গ চক্রকে অপ্রতিরোধ্য বিস্তারে সাহায্য করছি। সরকারি ভাবে এই হীনচেষ্টাকে নিষিদ্ধ করা দরকার।

বিশ্বজুড়ে পঙ্গপালের আক্রমণের অন্যতম কারণ মানুষের নির্বিচার পাখি নিধন, বিষাক্ত রাসায়নিক চাষ, বন ধ্বংসের পাশাপাশি নির্বোধভাবে প্রাকৃতিক পাখি ধরে এর বিনোদন বাণিজ্য করা, খাবার বাণিজ্য করা। বাণিজ্যিক ফল উৎপাদনের জঘন্য মডেলগুলোও এর জন্য দায়ী।

গত দুই দশকে মাছের খামার ও পুকুর জাল দিয়ে ঢেকে চোর থেকে মাছ রক্ষার আরেকটা চর্চা জারি আছে বাংলাদেশে। এই কাজে যে জাল ব্যবহার করা হয় তার বুননে পরিবেশ বান্ধব কোন প্রয়োগ নেই। এই জাল গুলো নির্বিচারে পাখি হত্যা করছে। অনেক ক্ষত্রে বাজ ও চিল থেকে মাছ রক্ষার জন্য জাল ব্যবহৃত হচ্ছে, অথচ জাল কেনা, লাগানো এবং এর সংরক্ষণ খরচ, পাখি যে পরিমাণ মাছ খায় তার চেয়ে কোন অংশেই কম নয়।

বাংলাদেশে পরিবেশ বিষয়ক একটা বড় মন্ত্রণালয় আছে। নিজেরা বিভিন্ন প্রকল্পের নামে পরিবেশ ভক্ষণ, পাখির আবাস গুলায় নির্বিচার গাছ বিক্রি ও কাটার মাধ্য দিয়ে সমাজ ও রাজনীতির পান্ডাদের পরিবেশ ভক্ষণে উৎসাহ দেয়া ছাড়া এদের কোন কাজ কি চোখে পড়ে? তাঁদের চোখের সামনেই কি পরিবেশ ধ্বংসকারী চর্চাগুলো চলছে না? নূন্যতম কোন উদ্যোগ দেখা যায় কি?

(ছবিটা এক ভাইয়ার স্টোরি থেকে নিয়েছি, উনার নাম ভুলে গেছি! নির্মমভাবে পাখি হত্যার বহু ছবি সংবাদ ও শ্যোশাল মিডিয়ায় প্রায়ই আসে)

 

লেখক

টেকসই উন্নয়ন বিষয়ক গবেষক

Sharing is caring!

Related Articles

Back to top button