
অবহেলিতই থেকে গেল বাবুডাইং
অবহেলিতই থেকে গেল নৈসর্গিক লীলাভূমি চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাবুডাইং। বরেন্দ্র অঞ্চলের রুক্ষ লালমাটি, উঁচু-নিচু টিলা আর সারি সারি সবুজ গাছের (অরণ্য) সমন্বয়ে গড়ে ওঠা বাবুডাইং দেখতে প্রতিদিন বিপুলসংখ্যক মানুষ আসে। কিন্তু অবকাঠামোগত উন্নয়ন না হওয়ায় বেড়াতে এসে নানা দুর্ভোগে পড়তে হয় দর্শনার্থীদের।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা শহর থেকে মাত্র আট কিলোমিটার দূরে সদর উপজেলার ঝিলিম ইউনিয়নের বাবুডাইংয়ে ২০০ একর খাসজমিতে গড়ে উঠেছে এক মনোরম পরিবেশ। উঁচু কয়েকটি টিলার জন্যই একসময়ের বাবুডাঙ্গা আঞ্চলিকভাবে এখন বাবুডাইং নামে পরিচিত। ছোট-বড় ২৬টি টিলার সমন্বয়ে গঠিত বাবুডাইংয়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করে এলাকাটির সৌন্দর্যকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিএমডিএ)। ২৫ বছর আগে এই এলাকায় বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় দেড় লাখ গাছ রোপণ করে তারা। কিন্তু বাবু ডাইংয়ের সৌন্দর্যের ওপর লোলুপ দৃষ্টি পড়ে কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির। বিভিন্ন উপায়ে তারা জাল কাগজপত্র তৈরি করে এখানকার বিপুল পরিমাণ খাসজমি দখল করে নিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ছাড়া স্থানীয় কিছু দুর্বৃত্ত সময়-অসময়ে শত শত গাছ কেটে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়েছে বাবু ডাইংয়ের সৌন্দর্যকে। বর্তমানে মাত্র ১০ থেকে ১৫ হাজার গাছ জীবিত রয়েছে। গাছ লাগানোর পাশাপাশি সে সময় এখানে পাঁচটি পুকুরও খনন করা হয়। এ ছাড়া প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা আড়াই কিলোমিটার দীর্ঘ হ্রদে একটি ক্রসড্যাম নির্মাণ করে হ্রদের পানি জমিতে সেচের কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।
বিভিন্ন জেলাগুলো থেকে দর্শনার্থীরা পরিবার-পরিজন নিয়ে বাবু ডাইংয়ের সৌন্দর্য দেখতে আসে। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ৩০-৩৫টির মতো দল প্রতিদিন আসছে বনভোজন করতে। তবে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো না থাকায় এখানে বেড়াতে এসে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে দর্শনার্থীরা। সুপেয় পানির ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত টয়লেট নেই। বড় সমস্যা নিরাপত্তাহীনতা। চাঁপাইনবাবগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সদর উপজেলা প্রকৌশলী আ ন ম ওয়াহেদুজ্জামান জানান, দর্শনার্থীদের সুবিধার্থে বাবুডাইংয়ে সুপেয় পানির জন্য নলকূপ স্থাপন ও বেশ কয়েকটি টয়লেট নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জেলা প্রশাসক এ জেড এম নূরুল হক জানান, বাবুডাইংয়ে অবকাঠামো উন্নয়নের জন্য প্রকল্প নেওয়া হবে।