
ব্রহ্মপুত্র নদের তীরবর্তী গ্রামগুলোতে ব্যাপক ভাঙন
পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে রাক্ষসী ব্রহ্মপুত্র নদের প্রলয়কারী ভাঙন শুরু হয়েছে। কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার বন্দবেড় ও চরশৌলমারী ইউনিয়নের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে অবস্থিত গ্রামগুলোতে নদের পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে।
শনিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় রাক্ষসী ব্রহ্মপুত্র নদের প্রলয়কারী ভাঙনের দৃর্শ্য। ব্রহ্মপুত্র নদের পূর্ব পাড় বামতীরে অবস্থিত ১২টি গ্রাম একযোগে ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছে। এসব এলাকার মানুষ ভাঙন আতঙ্কে দিনাতিপাত করছে।
ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন কবলিত এলাকাগুলো হলো উপজেলার বন্দবেড় ইউনিয়নের বাগুয়ারচর, দক্ষিণ বাগুয়ারর, দক্ষিণ বলদমারা পূর্বপাড়া, বাইসপাড়া, কুটিরচর (ফলুয়ারচর), বাঘমারা, চরশৌলমারী ইউনিয়নের চরইটালুকান্দা, সাহেবের আলগা, চর গেন্দার আগলা, চরঘুঘুমারী, ঘুঘুমারী, উত্তর খেদাইমারী, পশ্চিম পাখিউড়া ও পাখিউড়া।
ভাঙন রোধে জরুরি কোন পদক্ষেপ না নিলে অদূর ভবিষৎতে রৌমারী উপজেলা পরিষদ ভবনসহ সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকার সম্পদ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিলীন হয়ে যেতে পারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, কাঁচা পাকা রাস্তা, ব্রীজ, কালবার্ট, ঘর-বাড়ী, ফসলী জমি ও গাছপালা।
খেদাইমারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রাধান শিক্ষক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, বিদ্যালয়টি দুই বছরে তিন বার সরিয়ে নিয়েছি। সর্বশেষ বাগুয়ারচর গ্রামে ছিলাম দুই এক দিনের মধ্যে সরিয়ে অন্য স্থানে নিতে হবে। প্রতি বছর শিক্ষার্থীরা নদী ভাঙনে আতঙ্কে থাকে।
রৌমারী নদী ভাঙন প্রতিরোধ আন্দোলন বাস্তবায়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও স্থানীয় সিএসডিকে এনজিওর নির্বাহী পরিচালক মো. আবু হানিফ মাস্টার বলেন, উদ্বাস্তু পরিবারের পুর্নবাসন ও নদী ভাঙন রোধে স্থায়ী কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে রৌমারী ও রাজিবপুর নামের দুটি উপজেলা বিলীন হয়ে যেতে পারে।
রৌমারী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মজিবুর রহমান বঙ্গবাসী বলেন, উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন থেকে এক লক্ষ টাকা বরাদ্দ দিয়ে গাছ বাঁশ ফেলে নদের ভাঙন রোধে অস্থায়ীভাবে চেষ্টা করা হয়েছে। পানি বৃদ্ধি সাথে ব্যাপক ভাঙন শুরু হয়েছে রোধ করা যাচ্ছে না। এভাবে ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙন অব্যাহত থাকলে অদূর ভবিষৎতে মহান মুক্তিযুদ্ধের মুক্তঞ্চল হিসাবে পরিচিত রৌমারী উপজেলা বাংলাদেশের মানচিত্র হতে বিলীন হয়ে যাবে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সফিকুল ইসলাম বলেন, ভাঙন রোধে অস্থায়ীভাবে বাগুয়ারচর গ্রাম রক্ষায় বাঁশের বান্ডল তৈরী করা হয়েছিল ব্যাপক ভাঙনের কারণে রক্ষা করা যাচ্ছে না। ব্রহ্মপত্র নদের পূর্ব পাড় (বামতীর) স্থায়ীভাবে সংরক্ষণের জন্য ডিপিপি প্রণয়ন করে প্রেরণ করা হয়েছে একনেক সভায় অনুমোদন হলে স্থায়ী কাজ হবে।