উপকূলীয় অঞ্চলের আবকাঠামো নির্মাণ পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত এলজিইডির

উপকূলীয় অঞ্চলের আবকাঠামো নির্মাণ পদ্ধতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। মাটির ভার বহনক্ষমতা কীভাবে বাড়ানো যায়, তা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়েছে। খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, বরগুনা, যশোর এবং পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার মাটি ও জলবায়ু নিয়ে ছয় মাস ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়েছে এলজিইডির গবেষণা ইউনিটের একটি দল। দাতা সংস্থা ডিএফআইডির অর্থায়নে রিসার্চ ফর কমিউনিটি অ্যাকসেস পার্টনারশিপ (রিক্যাপ) প্রকল্পের আওতায় পরিচালিত গবেষণার ভিত্তিতে দক্ষিণাঞ্চলের অবকাঠামোর নকশা ও নির্মাণ পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এলজিইডি।

এলজিইডির খুলনা জোনের তিন জেলা খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষীরার গ্রাম সড়কগুলোও নির্মাণের অল্প দিনের মধ্যেই নাজুক হয়ে পড়ে। সড়কগুলো দেবে যাওয়ার পাশাপাশি নদী বা খালের ভাঙনে সংকুচিত হয়ে পড়ে। কিছু দূর পর পরই দেখা দেয় ফাটল। জানা যায়, খুলনা এলজিইডির আওতায় নয় উপজেলায় মোট ১১৭টি কার্পেটিং সড়ক রয়েছে। সড়কগুলোর মোট দৈর্ঘ্য ৯৪২ কিলোমিটার। এর মধ্যে বটিয়াঘাটা উপজেলায় সড়ক রয়েছে ৯৩ কিলোমিটার, দাকোপে ২৭, দীঘলিয়ায় ১১৭, ডুমুরিয়ায় ১৯২, কয়রায় ৩৮, পাইকগাছায় ১১৯, ফুলতলায় ১১৫, তেরখাদায় ৮৯ ও রূপসা উপজেলায় ১৫০ কিলোমিটার। প্রতি বছর ভারি বর্ষণ ও বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগে এসব সড়ক বেহাল হয়ে পড়ে। এছাড়া সড়ক ও সেতুর মতোই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে এলজিইডি নির্মিত এ ভবনগুলো। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলায় এলজিইডি নির্মিত নোয়াগ্রাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবনেও দেখা দিয়েছে ফাটল। খসে পড়েছে স্কুল ভবনের ঢালাই ও পলেস্তারা। এছাড়া ভবনের মেঝে দেবে গেছে। আতঙ্ক আর ঝুঁকি নিয়েই ওই ভবনে চলছে দুই শতাধিক শিক্ষার্থীর পাঠদান। আসলে মাটির গঠন ও লবণাক্ততার কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে জানান এলজিইডির কর্মকর্তারা।

এলজিইডির পরিকল্পনা বিভাগের তথ্যমতে, এখন থেকে খুলনা অঞ্চলের অবকাঠামোগুলো বিশেষভাবে নির্মাণ করা হবে। নকশা অধুনিকায়নের পাশাপাশি সংশোধন হবে নির্মাণ পদ্ধতি। নতুন নির্মাণ পদ্ধতিতে অবকাঠামো নির্মাণে ব্যবহার হবে জিও টেক্সটাইল (পিপি রেজিং থেকে তৈরি পাতলা কাপড়)। এ অঞ্চলের সড়ক, সেতুসহ যেকোনো অবকাঠামো নির্মাণের আগে মাটির ওপর জিও টেক্সটাইলের স্তর দেয়া হবে। ফলে পানির সঙ্গে আর মাটি বের হবে না। একই সঙ্গে স্যান্ড ড্রেন পদ্ধতিতে বালির মাধ্যমে মাটির ধারণক্ষমতা বাড়ানোর পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন নির্মাণসামগ্রীর সঙ্গে কেমিক্যাল অ্যাডমিক্সচার নামে এক ধরনের লিকুইড ব্যবহার করা হবে, যা টেকসই করবে অবকাঠামোকে।

Sharing is caring!

Related Articles

Back to top button