
‘ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তর’ নিজেই মশা প্রজননের কারখানা
মশক নিবারণী দপ্তরেই মশা উৎপাদন কারখানাদপ্তরের ভেতর সহস্রাধিক পরিত্যক্ত ড্রামের স্তূপ, ভবনের ছাদে ফুলগাছের টব ও অর্ধকাঁটা অব্যবহৃত ড্রামে পানি জমে মশার জন্ম হচ্ছে। দপ্তরের দক্ষিণ দিকে ঘন বাগান অন্য পাশে গাড়ি ধোয়ামোছা মেরামতের কারাখানা গড়ে তোলা হয়েছে। রাজধানী লালবাগের ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পাশে এই অফিসের দোতলা ভবন। ভবনটিতে মানুষের যাতায়াত নেই বললেই চলে। প্রবেশের গেটটিও প্রায় সময় বন্ধ থাকে। ভবনের তিন দিকের প্রাচীর ঘেঁষে বেশ কয়েকটি গাড়ির গ্যারেজ। যেখানে-সেখানে পড়ে থাকা অব্যবহৃত যন্ত্রাংশ ও টায়ার-টিউবে বৃষ্টির পানি জমে জন্ম নিচ্ছে মশা-মাছিসহ নানা বিষাক্ত কীটপতঙ্গ। ফলে মশার লার্ভা উৎপাদনের অভয়ারণ্যে হয়ে উঠেছে জায়গাটি।
ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তর সূত্রে জানা যায়, ১৯৪৮ সালে তৎকালীন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুইচালা টিনসেট ঘর করে অফিস স্থাপন করা হয়। দীর্ঘদিন পর সরকারি আদেশবলে ১৯৮০ সালে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের অধীনে এটিকে দপ্তরে স্থানান্তরিত করা হয়। পরে ২০১০ সালে নতুন দোতলা ভবন নির্মাণ করা হয়।
সাম্প্রতিক সময় আতঙ্ক ছড়ানো মশাবাহিত রোগব্যাধির প্রকোপ থেকে সুরক্ষা দিতে মশা নিধনের দায়িত্বে থাকা ‘ঢাকা মশক নিবারণী দপ্তর’ নিজেই মশা প্রজননের কারখানায় পরিণত হয়েছে। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে টায়ার-টিউবে জমে থাকা নোংরা পানিতে মশার লার্ভাসহ নানা কীটপতঙ্গের বংশবিস্তার ঘটছে। ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের এক কর্মী জানান, ওষুধ ছিটানোর জন্য প্রতি সপ্তাহে ১০টি করে ড্রাম দপ্তরের গুদাম থেকে দুই সিটি করপোরেশনের ১০টি অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয়। সেগুলো খালি হলে আবার এখানেই এনে রাখা হয়। এর মানে প্রতি সপ্তাহে ১০০টি ড্রাম জমা হয়। তিনি মনে করেন, খালি ড্রামগুলো সরালে পরিবেশটাও সুন্দর হতো।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব ও দপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরোজ কুমার নাথের কাছে জানতে চাইলে বলেন, ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন মশা মারার ওষুধ কিনে দপ্তরের গুদামে মজুদ রাখে। তারা ওষুধ ছিটানোর পর পরিত্যক্ত ড্রামগুলো এখানে স্তূপ করে রেখে যায়। এসবের বিষ ক্ষতিকর বলে সেটা সরাতে বলা হয়েছে। কিন্তু দাম কম বলে সিটি করপোরেশন বিক্রি করতে দেরি করছে।