
বৃক্ষসুশোভিত স্কুলের চারদিকে থৈ থৈ পানি যা দৃষ্টিনন্দন
কিশোরগঞ্জের বাজিতপুর উপজেলার বাহেরবালি (এসইএসডিপি) উচ্চ বিদ্যালয়ের চারদিকে থই থই পানি। এরই মাঝখানে সারি সারি পিলারের ওপর দাঁড়িয়ে আছে একটি দ্বিতল ভবন, যার ছাদে ফুলের বাগান। এই বর্ষা মৌসুমে স্কুলে ছাত্ররা আসে নৌকায় করে আর প্রায় বিকালেই নামে পর্যটকের ঢল। বাহেরবালি গ্রামের একদিকে মেঘনা নদী আর বাকি তিনদিকে হাওড়ের বিস্তীর্ণ জলরাশি।
এলাকাটি হাওড়বেষ্টিত হওয়ায় বছরের বেশির ভাগ সময় চারদিক পানিতে ডুবে থাকে। তখন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নৌকায় করে আসা-যাওয়া করে। দ্বিতল ভবনটির প্রতি তলায় ছয়টি করে মোট ১২টি কক্ষ রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান শিক্ষকের কক্ষসহ একটি টিচার্স রুম, ছাত্রছাত্রীদের জন্য পৃথক দুটি কমন রুম, একটি পাঠাগার, খেলাধুলা ও ক্যান্টিনের জন্য একটি রুম রয়েছে। বাকিগুলো শ্রেণীকক্ষ। এছাড়া ভবনের দুই পাশে ছেলেমেয়েদের জন্য পৃথক টয়লেট এবং শিক্ষকদের জন্যও আলাদা টয়লেট রয়েছে। রয়েছে একাধিক বেসিনসহ গ্লাস ফিটিং আলাদা ওয়াশরুম। ছাদের ওপর রয়েছে বসার স্থান ও ফুল-ফলের বাগান। তবে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা প্রতি ছয় মাস পর একবার বেতন পান। অবশ্য তারা তাতে অখুশি নন। বিচ্ছিন্ন এ এলাকার ছেলেমেয়েদের শিক্ষার আলো দিতে পারছেন, এতেই তাদের তৃপ্তি।
এদিকে পর্যটকদেরও আকর্ষণের বিষয় হয়ে উঠেছে দৃষ্টিনন্দন এ বিদ্যালয়। ছাদে দাঁড়ালে চোখে পড়ে শুধু থই থই পানি। মাঝে মাঝে মাছধরা ডিঙি নৌকা, দূরে কোথাও রাজহাঁসের দল, বাতাসের বেগ বাড়লে ছোট ছোট ঢেউ। আর চাঁদনি রাতে সৃষ্টি হয় এক নৈসর্গিক দৃশ্য। এ দৃশ্য দেখতে দলবেঁধে নৌকায় করে বেড়াতে আসে অনেকেই। বিচ্ছিন্ন গ্রামে আলোকবর্তিকাই শুধু নয়, সৌন্দর্য পিপাসুদের খোরাকও হয়ে উঠেছে বাহেরবালি উচ্চ বিদ্যালয়।
স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিদ্যালয়টি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) সহায়তায় ২০১১ সালে নির্মাণ করা হয় এবং আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম শুরু করে ২০১৩ সালে। এটি প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছিলেন স্থানীয় সংসদ সদস্য আফজাল হোসেন।