
আগে দেখি নিজের দেশ-এই স্লোগান মুখ থুবড়ে পড়ে আমাদের মন-মানসিকতায়
সীতাকুণ্ড থেকে অবশেষে ঘুরে এলাম। অনেক ভাললাগার সাথে কিছু মন্দলাগাও ছিল। আসলে আমাদের পর্যটন বানিজ্য কেন মুখ থুবরে পড়ে সেটা এইবার খুব ভালমত অনুধাবন হলো।
রাতে ঢাকা টু চিটাগাং এর বাসে আমরা ৪ জন রওনা দিলাম। রাস্তায় ভয়াবহ জ্যাম থাকায় আমরা ৭:৩০ টায় সীতাকুণ্ড বাজারের নামলাম। যেহেতু প্ল্যান ছিল রাতেই ব্যাক করবো তাই ভাবলাম সারাদিন এখানেই ঘুরাঘুরি করে হোটেলে রেস্ট নিয়ে এখান থেকেই বাসে উঠবো। সেভাবেই টিকেট করার সময় বলা হয়েছে।
বাজারে নেমে আবাসিক হোটেল খুঁজতে গিয়ে রীতিমত ধাক্কা খেলাম। একটা হোটেল দেখলাম যেটাতে ঢুকতে গেলে মাথা নিচু করে ঢুকতে হবে, ভয়াবহ নড়বড়ে বিল্ডিং। কেউ তেমন বলতে পারছে না থাকার আবাসিক হোটেল আছে কিনা। যাক অবশেষে হোটেল সাইমুন নামে একটা পেলাম, সেটাও ভয়ানক। তবু ভাবলাম নাই মামার চেয়ে কানা মামা হলেই আপাতত ফ্রেশ হয়ে ব্যাগ রেখে পাহাড়ে যাব। কিন্তু সেখান থেকে সরাসরি জানালো মেয়ে এলাউ না এই হোটেলে। কি আর করা অগত্যা মন খারাপ করে একটা খাবারের হোটেলে ঢুকে সেখানেই ফ্রেশ হলাম। সকালের নাসতা এখানে খেলাম, মালিক হিন্দু তাই সেখানে আমিষ নেই।রুটিটা ঘরের রুটির মতই লাগলো,সাথে সবজি আর ডাল। যাক ওনাদের খাবার আর ব্যবহার ভাল লেগেছে।
এরপর আবার ব্যাগ কাঁধে নিয়ে বাসস্ট্যান্ডে ফিরে সেখান থেকে লেগুনা করে সীতাকুণ্ডের ইকোপার্কের গেটে। সেখান থেকে সিএনজি নিয়ে চলে গেলাম সহস্রধারার মুখে। সিএনজিতে ব্যাগ রেখে আমরা নেমে গেলাম ৫৬৫ ফুট নিচে নেমে আমরা সহস্রধারার সাথে সাক্ষাত করলাম। আমরা এই সিএনজিকে নিয়েই সেখান থেকে চলে গেলাম বাঁশবাড়িয়া সমুদ্র সৈকত,পথিমধ্যে চা নাস্তা খেলাম। সেখানেও ঘুরাঘুরি করে আমরা ফিরে এলাম মেইন রোডে। টাটকা কলা আর ডাব খেয়ে। সিএনজিকে ১৫০০ টাকা দিলাম।এরপর বাসে করে আমরা চিটাগাং অলঙ্কারের মোড়ে নামলাম। সেখানে হোটেল ভাড়া নিতে গিয়ে নানান ঝামেলায় পড়লাম,৩ জন মেয়ে আর ১ জন ছেলে থাকায় তারা বড় ৩ বেডের একরুম ভাড়া দেবে না। ছেলের জন্য আলাদা রুম নিতে হবে। বললাম আমরা ৪ টায় নিয়ে ৬ ঘন্টার জন্য ভাড়া নিচ্ছি রাত ১০টায় ব্যাক করবো। একটু ফ্রেশ হয়ে কিছুক্ষণ রেস্ট নেব। যাক হোটেল এশিয়ায় পেলাম ১২০০ টাকায় নন এসি রুম, ৩ বেড।
গ্রুপ থেকে এসেছি বলায় ২ টা হোটেলে ডিনাই করলো, তখন আমার মেয়ে এই হোটেলে বললো আমার মামা, মা আর খালা।নিজের আইডি কার্ড দেখিয়ে সেই ব্যবস্থা করে দিল।
প্রশ্ন হলো সত্যি কথা বললে এই দেশে ছেলে-মেয়েরা একসাথে একরুম নিতে পারেনা, সেই দেশে মানুষ কিভাবে বেড়াতে যাবে? ফরেনাররা যত কম খরচে বেড়ানো যায় সেভাবেই বেড়াতে চায় কিন্তু এই দেশ পর্যটক বান্ধবই না।