
বিশাল জলরাশির কাছে আমরা ঋণী
“সকাল বেলায় উঠে দেখলুম চমৎকার রোদদুর উঠেছে এবং শরতের পরিপূর্ণ নদীর জল তল-তল থৈ-থৈ করছে। নদীর জল এবং তীর প্রায় সমতল, ধানের ক্ষেত সুন্দর সবুজ, গ্রামের গাছপালা সতেজ এবং নিবিড় হয়ে উঠেছে। এমন সুন্দর লাগল সে আর কী বলব। ………বিকেলে পদ্মার ধারে নারকেল বনের মধ্যে সূর্যাস্ত হলো।… দূরে আমবাগানে সন্ধ্যার ছায়া পড়ে আসছে। নারকেল গাছগুলোর পেছনে আকাশ সোনায় সোনালি হয়ে উঠেছে। পৃথিবী যে কী আশ্চর্য সুন্দরী তা এইখানে না এলে মনে পড়ে না।… যখন সন্ধ্যাবেলা জল স্তব্ধ থাকে, তীর আবছায়া হয়ে আসে এবং আকাশের প্রান্তে সূর্যাস্তের দীপ্তি ক্রমে ম্লান হয়ে যায়, তখন আমার সর্বাঙ্গে নিস্তব্ধ প্রকৃতির কী একটা বৃহৎ, উদার, বাক্যহীন স্পর্শ অনুভব করি”
(রবীন্দ্রনাথ)
উদ্ভট আর কিছুটা অশ্লীল উল্কি আঁকা এক বিশালাকৃতির উদাম গায়ের” রেড নেক” আমেরিকানকে দেখলাম পা ভিঁজিয়ে লেকের বিশাল জলরাশির দিকে অপলক তাকিয়ে আছে। প্রায়ই আমার মনে জিজ্ঞেস হয় এমন কি আছে বিশাল জলরাশির যেমন এই হ্রদের, কিংবা অথৈ নদীর অথবা আদিগন্ত সমুদ্রের, যার তীরে এসে মানুষ আমুল বদলে যায়? নাকি জলরাশির বিশালত্বের কাছে নিজেকে অতি ক্ষুদ্র মনে হতে থাকায় কি শরীর মন জুড়ে কোন কি মন:রাসায়নিক পরিবর্তণ ঘটে? জানি না। হতে পারে! এরই আকর্ষণেই কি মানুষ বারবার ছুটে আসে এমনসব জলরাশির পাড়ে?
হ্রদ, নদী, সমুদ্র আমাদের মনে ও কি আনে জোয়ার ভাটা? এরই টানে কেউ কখনো হয়ে ওঠে উদাসী আবার কখনো শৈশব উচ্ছলতায় ঝাঁপিয়ে পড়ে স্বছ, শীতল জলরাশিতে! বালু তীরে গড়ে তুলি কল্পনার প্রাসাদ!
আজ বিকেলে ফিরে যাচ্ছি পাথর ইট, ইস্পাতের তৈরী বিশ্বের বৃহত্তম নগর জঙ্গল নিউইয়র্ক সিটিতে!
লেখকঃ Rezaul Kabir Badal