স্বাস্থ্যঝুঁকিতে জাহাজ ভাঙ্গা শিল্পের শ্রমিকরা

গ্রিন নিউজ: জাহাজ ভাঙা শিল্পের শ্রমিকরা সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হন মেসোথেলিওমা (ক্যান্সার) ও অ্যাসবেসটোসিস বা শ্বাসতন্ত্রজনিত সমস্যায়। ডার্মাটাইটিস, স্ক্যাবিজ ও ফাঙ্গাল ইনফেকশনে ভোগেন চামড়া ও রি-রোলিং মিলের শ্রমিকরা। ধূলিকণার কারণে অ্যাজমা, অ্যালার্জি, ব্রঙ্কাইটিসে আক্রান্ত হন জাহাজ ভাঙা ও রসায়ন শিল্পের শ্রমিকরা। নিরাপদ স্যানিটারি ব্যবস্থার অভাবে নানা ধরনের স্ত্রীরোগজনিত সমস্যায় ভুগতে হয় নির্মাণ খাতের নারী শ্রমিকদের। আর আর্দ্র পরিবেশে কাজ করার কারণে দীর্ঘমেয়াদি ঠাণ্ডাজনিত রোগে ভোগেন চিংড়ি শিল্পের শ্রমিকরা।
পরিত্যক্ত জাহাজ হইতে নিঃসরিত রাসায়নিক বর্জ্য যথেচ্ছভাবে উপকূলে ফেলার কারণে ওই অঞ্চলে প্রাণিকুলের অস্তিত্ব বিপজ্জনক অবস্থার মধ্যে নিপতিত। জাহাজ ভাঙ্গার ফলে উদগীরণ ঘটে কার্বন, সীসা, ক্রোমিয়াম ও ক্যাডমিয়াম কণার, যেইগুলি বায়ুতে মিশিয়া শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে মানুষের ফুসফুসসহ শরীরের নানা অঙ্গে অ্যাজমা ও মারাত্মক সব রোগের সৃষ্টি করে।

বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ এবং পরিবেশ সংক্রান্ত আইন ২০০৬ অনুযায়ী জাহাজ কাটাবার ফলে স্বাস্থ্যঝুঁকি ও পরিবেশ দূষণ রোধ করার দায়িত্ব মালিক ও আমদানিকারকদের। কিন্তু জাহাজ মালিকরা কোনোরকম বর্জ্য নিষ্কাশন না করেই অনুন্নত দেশগুলির কাছে পরিত্যক্ত জাহাজ বিক্রয় করে দেয় যা আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন ও সমুদ্র পরিবেশ সংক্রান্ত হংকং চুক্তির অবমাননা। পরিবেশসম্মত শিল্প ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত না করতে পারলে ঝুঁকির মাত্রা দিন দিন বাড়তে থাকবে। এ জন্য আইনের যথাযথ প্রয়োগের যেমন বিকল্প নেই তেমনি প্রয়োজন পরিবেশ ও শ্রমিক নিরাপত্তা বিষয়ক সামাজিক সচেতনতার। এইক্ষেত্রে নৈতিকতার প্রশ্নটিও উপেক্ষা করার কোন সুযোগ নেই ।

Sharing is caring!

Related Articles

Back to top button